Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
বোরো ধান
 জমির ধান শতকরা ৮০ ভাগ পেকে গেলে রিপার/কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে কম খরচে, স্বল্প সময়ে ধান সংগ্রহ করুন।
 কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৪ বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই করা যায়।
হাত/রিপার দিয়ে সংগৃহীত ধান পাওয়ার থ্রেসার দিয়ে মারাই করুন। এতে সময় ও খরচ বাঁচবে। 
আউশ ধান 
 চারার বয়স ১২ থেকে ১৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের প্রথম কিস্তি হিসেবে একরপ্রতি ১৮ কেজি ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করুন। এর ১৫ দিন পর একই মাত্রায় দ্বিতীয় কিস্তি উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। 
ইউরিয়া সারের কার্যকারিতা বাড়াতে জমিতে সার প্রয়োগের সময় ছিপছিপে পানি রাখাসহ জমি আগাছা মুক্ত রাখুন।
আমন ধান
এ মাসের মধ্যেই রোপা আমনের জন্য বীজতলা তৈরি করুন এবং বন্যাকালীন সময়ে চারা নষ্ট হয় বিধায় অধিক পরিমাণ চারা উৎপাদন করুন। 
 লবণাক্ত এলাকার জন্য ব্রি ধান৫৩, ব্রি ধান৫৪, ব্রি ধান৭৩; অলবণাক্ত জোয়ারভাটা এলাকার জন্য ব্রি ধান৭৬, ব্রি ধান৭৭, ব্রি ধান৭৮; জলমগ্ন এলাকার জন্য ব্রি ধান৫১, ব্রি ধান৫২, ব্রি ধান৭৯; খরা প্রবণ এলাকার জন্য ব্রি ধান৫৬, ব্রি ধান৭১; স্বল্পমেয়াদি হিসেবে ব্রি ধান৫৭, ব্রি ধান৭৫; জিংক সমৃদ্ধ ধানের জন্য ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৭২ এছাড়া অধিক ফলনের জন্য ব্রি হাইব্রিড ধান৪, ব্রি হাইব্রিড ধান৬ আবাদ করুন।
খরাপ্রবণ এলাকায় রোপা আমন ধানক্ষেতে মিনি পুকুর খনন করে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিন।
জ্যৈষ্ঠ মাসে আউশ ও বোনা আমনের জমিতে পামরী পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। আক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে হাতজাল, গামছা, লুঙ্গি, মশারি দিয়ে পামরী পোকা ধরে মেরে ফেলুন। তাছাড়া আক্রান্ত গাছের গোড়া থেকে ৫ সেন্টিমিটার (২ ইঞ্চি) রেখে বাকি অংশ কেটে দিন। আক্রমণ বেশি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করুন।
পাট
পাটের জমিতে আগাছা পরিষ্কার, ঘন ও দুর্বল চারা তুলে পাতলা করা, সেচ এসব কাজগুলো যথাযথভাবে করুন। 
 ফাল্গুনি তোষা জাতের জন্য একরপ্রতি ৪০ কেজি ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করুন। 
 মাটিতে রস না থাকলে বা দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হলে হালকা সেচ দিন এবং বৃষ্টির কারণে পানি জমে থাকলে তা বের করার ব্যবস্থা নিন। 
এ মাসে পাটের বিছা পোকা এবং ঘোড়া পোকা জমিতে আক্রমণ করে থাকে। এদের আক্রমণ রোধ করতে পোকার ডিমের গাদা, পাতার নিচ থেকে পোকা সংগ্রহ করে মেরে বা পুরিয়ে ফেলুন। আক্রমণ বেশি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিকভাবে, সঠিক সময়ে, সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করুন।
শাক-সবজি
লতানো সবজির দৈহিক বৃদ্ধি যত বেশি হবে তার ফুল ফল ধারণ ক্ষমতা তত কমে যায়। সেজন্য বেশি বৃদ্ধি সমৃদ্ধ লতার ১৫-২০ শতাংশের কেটে দিন এতে তাড়াতাড়ি ফুল ও ফল ধরবে। 
কুমড়া জাতীয় সব সবজিতে হাত পরাগায়ন বা কৃত্রিম পরাগায়ন অধিক ফলনে দারুণভাবে সহায়তা করবে। গাছে ফুল ধরা শুরু হলে প্রতিদিন হাত পরাগায়ন নিশ্চিত করলে ফলন অনেক বেড়ে যাবে।
এ মাসে কুমড়া জাতীয় ফসলে মাছি পোকা দারুণভাবে ক্ষতি করে থাকে। এক্ষেত্রে জমিতে খুঁটি বসিয়ে খুঁটির মাথায় বিষটোপ ফাঁদ দিলে বেশ উপকার হয়। এ ছাড়া সেক্স ফেরোমন ব্যবহার করেও এ পোকার আক্রমণ রোধ করা যায়। 
বিবিধ
বাড়ির কাছাকাছি উঁচু এমনকি আধা ছায়াযুক্ত জায়গায় আদা হলুদের চাষ করুন। 
মাঠের মিষ্টি আলু, চিনাবাদাম বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই তুলে ফেলুন। 
গ্রীষ্মকালীন মুগডালের চাষও এ মাসে করতে পারেন। 
পতিত বা আধা ছায়াযুক্ত স্থানে অনায়াসে লতিরাজ বা পানি কচু বা অন্যান্য উপযোগী কচুর চাষ করুন।
সবুজ সার করার জন্য ধইঞ্চা বা অন্য গাছের বয়স  ৩৫-৪৫ দিন হলে চাষ ও মই দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিন। সবুজ সার মাটিতে মেশানোর ৭/১০ দিন পরই ধান বা অন্যান্য চারা রোপণ করতে পারবেন।
গাছপালা
আগামী মাসে চারা লাগানোর জন্য জায়গা নির্বাচন, গর্ত তৈরি ও গর্ত প্রস্তুতি, সারের প্রাথমিক প্রয়োগ, চারা নির্বাচন এ কাজগুলো এমাসেই শেষ করতে হবে। 
নারকেল, সুপারির উপযুক্ত মাতৃগাছ থেকে ভালোবীজ সংগ্রহ করে বীজতলায় এখন লাগাতে পারেন।
 
লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল : সধহুঁৎথ১৯৮০@ুধযড়ড়.পড়স

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
ধান
 যারা শীতের কারণে দেরিতে চারা রোপণ করেছেন  তাদের ধানের চারার বয়স ৫০-৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিস্তি উপরিপ্রয়োগ করুন। 
 ধানের কাইচ থোড় আসা থেকে শুরু করে ধানের দুধ আসা পর্যন্ত ক্ষেতে ৩/৪ ইঞ্চি পানি ধরে রাখুন।  বোরো ধানের জমিতে গান্ধি পোকা দমনে আলোক ফাঁদ, বিষটোপ ব্যবহার করুন। আক্রমণ বেশি হলে অনুমোদিত কীটনাশক স্প্রে করুন।
বন্যাপ্রবণ নিচু এলাকায় অল্পদিনে পাকে এমন আগাম জাতের আউশ ধান (ব্রি ধান৪২, ব্রি ধান৪৩, ব্রি ধান ৬৫, ব্রি ধান৮২, ব্রি ধান৮৩, বিনা ধান-১৯, বিনা  ধান-২১) চাষ করুন।
গম
 দেরিতে বপন করা গম পেকে গেলে রিপারের সাহায্যে সংগ্রহ করুন। এতে বিঘা প্রতি খরচ হবে মাত্র ২০৪ টাকা। 
ভুট্টা (রবি)
 বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে শুকনো আবহাওয়ায় জমিতে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ গাছের মোচা খড়ের রঙ ধারণ করলে মোচা সংগ্রহ করুন। 
ভুট্টা (খরিফ)
 গ্রীষ্মকালীন ভুট্টা চাষ করতে চাইলে এ মাসে বীজ বপন করতে হবে। খরিফ মৌসুমের জন্য ভুট্টার উন্নত জাতগুলো হলো বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১০, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৫, বারি হাইব্রিড          ভুট্টা-১৭ এসব। 
পাট
 চৈত্র মাসের শেষ পর্যন্ত পাটের বীজ বপন করা যায়। 
 পাটের ভালো জাতগুলো হলো ও-৯৮৯৭, বিজেআরআই তোষা পাট-৪, বিজেআরআই তোষা পাট-৫, বিজেআরআই তোষা পাট-৬, বিজেআরআই দেশি   পাট-৫, বিজেআরআই দেশি পাট-৬, বিজেআরআই দেশি পাট-৭, বিজেআরআই দেশি পাট-৮। 
 ভালো ফলনের জন্য প্রতি একরে ৭০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি টিএসপি, ১২ কেজি এমওপি, ১৮ কেজি জিপসাম এবং প্রায় ৪.৫ কেজি জিংকসালফেট সার প্রয়োগ করতে হবে।
শাক-সবজি
 পানির অপচয় কমাতে তরমুজ, কুমড়া. শসা, ঝিঙা, করলা, লাউ গর্ত পদ্ধতিতে বপন করুন।
 লতা জাতীয় শাকসবজির জন্য মাচার ব্যবস্থা করুন।
গাছপালা 
 এ সময় বৃষ্টির অভাবে মাটিতে রসের পরিমাণ কমে আসে, তাই গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি দেয়ার ব্যবস্থা করুন। 
 আম গাছে হপার পোকার আক্রমণ হলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন- সিমবুস/ফেনম/ডেসিস/ফাইটার ২.৫ ইসি প্রভৃতি প্রয়োগ করে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিন। 
 আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বেই একবার এবং এর একমাস পর আর একবার প্রতি লিটার পানির সাথে ১.০ মিলি সিমবুস/ফেনম/ডেসিস/ফাইটার ২.৫ ইসি মিশিয়ে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপাল ভালোভাবে ভিজিয়ে ¯েপ্র করুন। 
 এ সময় আমে পাউডারি মিলডিউ ও এ্যাথ্রাকনোজ রোগ দেখা দিতে পারে। টিল্ট, রিডোমিল গোল্ড, কান্্জা বা ডায়থেন এম ৪৫ অনুমোদিত মাত্রায় প্রয়োগ করুন। 
 এ মাসে পেঁপের চারা রোপণ করতে পারেন । 
বিবিধ
 উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন, অধিক লাভবান হন।
 স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
 শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।
 
লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল :manzur_1980@yahoo.com

ফাল্গুন মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

ফাল্গুন মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
বোরো ধান
    ধানের চারার বয়স ৫০-৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিস্তি উপরি প্রয়োগ করুন।
    ধানের কাইচ থোড় আসা থেকে শুরু করে ধানের দুধ আসা পর্যন্ত ক্ষেতে ৩/৪ ইঞ্চি পানি ধরে রাখুন।
    রোগ ও পোকা দমনের জন্য নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শণ করুন এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে (আলোর ফাঁদ পেতে, উপকারী পোকা সংরক্ষণ করে, ক্ষেতে ডাল-পালা পুতে পাখি বসার ব্যবস্থা করে) ধানক্ষেত বালাই মুক্ত রাখুন।
গম
    এ মাসের দ্বিতীয় পক্ষ থেকে গম পাকা শুরু হয়। গম শীষের শক্ত দানা দাঁত দিয়ে কাটলে যদি কট কট শব্দ হয় তবে বুঝতে হবে গম কাটার সময় হয়েছে। রোদেলা দিন দেখে রিপার/রিপার বাইন্ডারের মাধ্যমে কম খরচে, স্বল্প সময়ে গম সংগ্রহ করুন।
    বীজ ফসল কাটার পর রোদে শুকিয়ে খুবই তাড়াতাড়ি মাড়াই ঝাড়াই করুন।
    সংগ্রহ করা বীজ ভালো করে শুকানোর পর ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করুন।
ভূট্টা (রবি)
    জমিতে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ গাছের মোচা খড়ের রঙ ধারণ করলে এবং পাতার রং কিছুটা হলদে হলে মোচা সংগ্রহ করুন।
ভূট্টা (খরিপ)
    খরিপ মৌসুমে ভূট্টা চাষ করতে চাইলে এমাসেই বীজ বপন করুন এবং প্রয়োজনীয় যত্ন নিন।
    অধিক ফলনের জন্য উচ্চফলনশীল আধুনিক জাত চাষ করুন।
    ভূট্টার উন্নত জাতগুলো হলো বারি হাইব্রিড ভূট্টা-৯, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-১০, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-১৪, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-১৫ এসব।
পাট
    ফাল্গুনের মাঝামাঝি থেকে চৈত্রের শেষ পর্যন্ত পাটের বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।
    সারিতে পাট বীজ বপন করুন, আন্তপরিচর্যা সহজ হবে, ফলন ও গুণগতমান বৃদ্ধি পাবে।
    ফাল্গুন মাসে বপন উপযোগী পাটের ভালো জাতগুলো হলো সিসি-৪৫, বিজেআরআই দেশী পাট শাক-১ (বিজেসি-৩৯০), তোষা পাট (ও ৯৮৯৭, ও-৭২)।
শাক-সবজি
    এ মাসে বসতবাড়ির বাগানে জমি তৈরী করে ডাঁটা, কমলিশাক, পুঁইশাক, করলা, ঢেঁড়স, বেগুন, পটল চাষের উদ্যোগ নিতে হবে।
    মাদা তৈরি করে চিচিঙ্গা, ঝিঙা, ধুন্দুল, শসা, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়ার বীজ বুনে দিতে পারেন।
গাছপালা
    আমের মুকুলে এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দমনে গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্ব পর্যন্ত আক্রান্ত গাছে প্রোপিকোনাজল আথবা মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক পানিতে মিশিয়ে ¯েপ্র করুন। এছাড়া আমের আকার মটর দানার মতো হলে গাছে ২য় বার ¯েপ্র করুন।
    হপার নিম্ফ দমনে আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বেই একবার এবং এর একমাস পর আর একবার সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক পানির সাথে মিশিয়ে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপাল ভালোভাবে ভিজিয়ে ¯েপ্র করুন।
    কাঁঠালের ফল পঁচা বা মুচি ঝরা রোধে কাঁঠাল গাছ এবং নিচের জমি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। আক্রান্ত ফল ভেজা বস্তা জড়িয়ে তুলে মাটিতে পুঁতে ধ্বংস করুন। মুচি ধরার আগে ও পরে ১০ দিন পর পর ২/৩ বার বোর্দ্রাে মিশ্রণ বা মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
বিবিধ
    উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন, অধিক লাভবান হন।
    স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
    শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।

লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল : manzur_1980@yahoo.com

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
আউশ  
    এসময় আউশ ধান পাকে। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে পাকা আউশ ধান রিপার/কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে কম খরচে, স্বল্প সময়ে সংগ্রহ করুন।
আমন ধান
    রোপা আমন ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যে মূল জমিতে শেষ চাষের সময় হেক্টর প্রতি ৯০ কেজি টিএসপি, ৭০ কেজি এমওপি, ১১ কেজি দস্তা এবং ৬০ কেজি জিপসাম দিন।
    জমির এক কোণে মিনি পুকুর খনন করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করুন।
    চারার বয়স ৩০-৪০ দিন হলে জমিতে রোপণ করুন।
    চারা রোপনের ১২-১৫ দিন পর প্রথমবার, এর ১৫-২০ দিন পর দ্বিতীয়বার এবং তার ১৫-২০ দিন পর তৃতীয়বার ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করুন।
    গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করলে চারা লাগানোর ১০ দিনের মধ্যে প্রতি চার গুছির জন্য ১৮ গ্রামের ১টি গুটি ব্যবহার করুন।
    পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য ধানের ক্ষেতে বাঁশের কঞ্চি বা ডাল পুঁতে দিন যাতে পাখি বসতে পারে এবং এসব পাখি পোকা ধরে খেতে পারে।
পাট
    ক্ষেতের অর্ধেকের বেশি পাট গাছে ফুল আসলে পাট কেটে, পাতা ঝড়িয়ে জাগ দিন।
    পাট পচে গেলে আঁশ ছাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাটের আঁশ ছাড়িয়ে ভালো করে ধোয়ার পর ৪০ লিটার পানিতে এক কেজি তেঁতুল গুলে তাতে আঁশ ৫-১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন, এতে উজ্জ্বল বর্ণের পাট পাওয়া যায়।
    যেখানে জাগ দেয়ার পানির অভাব সেখানে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচাতে পারেন। এতে আঁশের মান ভালো হয় এবং পচন সময় কমে যায়।
    বন্যার কারণে অনেক সময় সরাসরি পাট গাছ থেকে বীজ উৎপাদন সম্ভব হয় না। তাই পাটের ডগা বা কা- কেটে উঁচু জায়গায় লাগিয়ে তা থেকে খুব সহজেই বীজ উৎপাদন করার ব্যবস্থা নিন।
তুলা
    রংপুর, দিনাজপুর অঞ্চলে আগাম শীত আসে, সে জন্য এসব অঞ্চলেএ মাসের মধ্যে তুলার বীজ বপন করুন। তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাত যেমন সিবি ১৬, সিবি১৭, সিবি১৮, সিডিবি তুলা এম-১, সিবি হাইব্রিড-১ আবাদ করুন।
শাকসবজি
    বর্ষাকালে শুকনো জায়গার অভাব হলে টব, মাটির চাড়ি, কাঠের বাক্স এমনকি পলিথিন ব্যাগে সবজির চারা উৎপাদনের ব্যবস্থা নিন।
    সবজি বাগানে প্রয়োজনে মাদায় মাটি দিন, আগাছা পরিষ্কার করুন, গাছের গোড়ায় পানি যেন না জমে সে জন্য পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করুন, মরা বা হলুদ পাতা কেটে ফেলুন, প্রয়োজনে সারের উপরিপ্রয়োগ করুন।
    লতা জাতীয় গাছের বৃদ্ধি বেশি হলে ১৫-২০ শতাংশ পাতা ও লতা কেটে দিলে তাড়াতাড়ি ফুল ও ফল ধরবে।
    কুমড়া জাতীয় সব সবজিতে হাত পরাগায়ন বা কৃত্রিম পরাগায়ন অধিক ফলনে দারুণভাবে সহায়তা করে। গাছে ফুল ধরা শুরু হলে প্রতিদিন ভোরবেলা হাতপরাগায়ন নিশ্চিত করুন এতে ফলন অনেক বেড়ে যাবে।
    গত মাসে শিম ও লাউয়ের চারা রোপনের ব্যবস্থা না নিয়ে থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন। আগাম জাতের শিম এবং লাউয়ের জন্য প্রায় ৩ ফুট দূরে দূরে ১ ফুট চওড়া ও ১ ফুট গভীর করে মাদা তৈরি করুন।
গাছপালা
    এখন সারা দেশে গাছ রোপণের কাজ চলছে। ফলদ, বনজ এবং ঔষধি বৃক্ষজাতীয় গাছের চারা বা কলম রোপণের ব্যবস্থা নিন।
    উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে একহাত চওড়া এবং একহাত গভীর গর্ত করে অর্ধেক মাটি এবং অর্ধেক জৈবসারের সাথে ১০০ গ্রাম টিএসপি এবং ১০০ গ্রাম এমওপি ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে সার ও মাটির এ মিশ্রণ গর্ত ভরাট করে রেখে দিন। দিন দশেক পরে গর্তে চারা বা কলাম রোপণ করুন।
    ভালো জাতের স্বাস্থ্যবান চারা রোপণ করুন। চারা রোপণের পর গোড়ার মাটি তুলে দিন এবং খুটির সাথে সোজা করে বেঁধে দিন। রোপণ করা চারার চারপাশে বেড়া দিন।
    কোন পতিত জমি যেন বৃক্ষরোপণ থেকে বাদ না যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
বিবিধ
    উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন, অধিক লাভবান হন।
    স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
    শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।

লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল manzur_1980@yahoo.com

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
বোরো ধান
* ধানের চারার বয়স ৫০-৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিস্তি উপরিপ্রয়োগ করুন। 
 *ধানের কাইচ থোড় আসা থেকে শুরু করে ধানের দুধ আসা পর্যন্ত ক্ষেতে ৩-৪ ইঞ্চি পানি ধরে রাখুন। 
 *AWD পদ্ধতিতে সেচ দিন, সেচ খরচ কমান।
  ক্ষেতে ডাল পালা পুঁতে ও আলোক ফাঁদের মাধ্যমে পোকা দমন করুণ।
গম
 *এ মাসের দ্বিতীয় পক্ষ  থেকে গম পাকা শুরু হয়।      
 *রিপার দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ শতাংশ গম কাটা যায়। এতে সময় ও খরচ কমে। ভুট্টা (রবি) 
 *জমিতে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ গাছের মোচা খড়ের রঙ ধারণ করলে এবং পাতার রং কিছুটা হলদে হলে মোচা সংগ্রহ করুন। 
ভুট্টা (খরিপ)
 *খরিপ মৌসুমে ভুট্টা চাষ করতে চাইলে এমাসেই বীজ বপন করুন এবং প্রয়োজনীয় যতœ নিন। 
 *অধিক ফলনের জন্য উচ্চফলনশীল আধুনিক জাত চাষ করুন।
 *ভুট্টার উন্নত জাতগুলো হলো বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৯, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১০, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪, বারি হাইব্রিড    ভুট্টা-১৫ এসব।
পাট
 *ফাল্গুনের মাঝামাঝি থেকে চৈত্রের শেষ পর্যন্ত পাটের বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। 
 *সারিতে পাটবীজ বপন করুন, আন্তঃপরিচর্যা সহজ হবে, ফলন ও গুণগতমান বৃদ্ধি পাবে।
 *ফাল্গুন মাসে বপন উপযোগী পাটের ভালো জাতগুলো হলো সিসি-৪৫, বিজেআরআই দেশি পাটশাক-১ (বিজেসি-৩৯০), তোষা পাট ও এম-১। 
শাকসবজি
 *এ মাসে বসতবাড়ির বাগানে জমি তৈরি করে ডাঁটা,     কলমিশাক, পুঁইশাক, করলা, ঢেঁড়স, বেগুন, পটোল চাষের উদ্যোগ নিতে হবে। 
 *মাদা তৈরি করে চিচিঙ্গা, ঝিঙা, ধুন্দুল, শসা, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়ার বীজ বুনে দিতে পারেন। 
গাছপালা 
 *উচ্চ মূল্যের ফসল কফি ও কাজু বাদাম চাষ করুণ। 
 *আমের মুকুলে এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দমনে গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্ব পর্যন্ত আক্রান্ত গাছে প্রোপিকোনাজল অথবা মেনকোজেব গ্রুপের          ছত্রাকনাশক পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন। এ ছাড়া আমের আকার মটর দানার মতো হলে গাছে ২য় বার স্প্রে করুন।
 *হপার নিম্ফ দমনে আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বেই একবার এবং একমাস পর আরেকবার সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক পানির সাথে মিশিয়ে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপাল ভালোভাবে ভিজিয়ে ¯েপ্র করুন। 
 *কাঁঠালের ফল পঁচা বা মুচি ঝরা রোধে কাঁঠাল গাছ এবং নিচের জমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। আক্রান্ত ফল ভেজা বস্তা জড়িয়ে তুলে মাটিতে পুঁতে ধ্বংস করুন। মুচি ধরার আগে ও পরে ১০ দিন পর পর ২/৩ বার বোর্দ্রাে মিশ্রণ বা মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন। 
*বিবিধ
 *উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন, অধিক লাভবান হন।
 *স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
 *শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন। 
 
লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল : manzur_1980@yahoo.com

অগ্রহায়ণ মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

অগ্রহায়ণ মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
আমন ধান
    আমন ধান পেকে গেলে রোদেলা দিন দেখে রিপার/কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে কম খরচে, স্বল্প সময়ে ধান সংগ্রহ করুন।
    ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকায় আমন ধান শতকরা ৮০ ভাগ পাকলে দ্রুত সংগ্রহ করুন।
    আমন ধান কাটার পরপরই জমি চাষ দিয়ে রাখুন, এতে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে মাটির রস কম শুকাবে।
    উপকূলীয় এলাকায় রোপা আমন কাটার আগে রিলে ফসল হিসেবে খেসারি আবাদ করুন।
বোরো ধান
    বোরো ধানের বীজতলা তৈরির জন্য রোদ পড়ে এমন উর্বর ও সেচ সুবিধাযুক্ত জমি নির্বাচন করে চাষের আগে প্রতি বর্গমিটার জায়গার জন্য ২-৩ কেজি জৈবসার দিয়ে ভালোভাবে জমি তৈরি করুন।
    পানি দিয়ে জমি থকথকে কাদা করে এক মিটার চওড়া এবং জমির দৈর্ঘ্য অনুসারে লম্বা করে ভেজা বীজতলা তৈরি করুন।
    যেখানে ঠা-ার প্রকোপ বেশি সেখানে শুকনো বীজতলা তৈরি করুন। এক্ষেত্রে প্রতি দুই প্লটের মাঝে ২৫-৩০ সেমি. নালা রাখুন।
    রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চাষের জন্য ট্রেতে চারা তৈরি করুন।
    সেচের পানির ঘাটতি থাকে এমন এলাকায় আগাম জাত হিসেবে ব্রি ধান৬৭ এবং ব্রি ধান৬৮, ব্রি ধান৭৪, ব্রি ধান৮১, ব্রি ধান ৮৪ ও ব্রি ধান৮৬, ব্রি ধান৮৮, বিনাধান২৪, এসএল৮এইচ প্রভৃতি চাষ করুন।
    উর্বর জমি ও পানি ঘাটতি নাই এমন এলাকায় ব্রি ধান২৯, ব্রি ধান৫০, ব্রি ধান৬০, ব্রি ধান৬৮, ব্রি ধান৭৪, ব্রি ধান৮৯, ব্রি ধান৯২, ব্রি ধান ৯৭, ব্রি ধান৯৯, বঙ্গবন্ধু ধান১০০, ব্রি ধান১০১, ব্রি ধান১০২, ব্রি হাইব্রিড ধান১, ব্রি হাইব্রিড ধান২ ও ব্রি হাইব্রিড ধান৩, ব্রি হাইব্রিড ধান৫ এসব চাষ করুন।
    হাওর অঞ্চলের নিচু এলাকায় ব্রি ধান৬৭ চাষ করুন।
    লবণাক্ত এলাকায় ব্রি ধান৬৭, ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৯, বিনাধান-১০ চাষ করুন।
গম
    অগ্রহায়ণের শুরু থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ পর্যন্ত গম বোনার উপযুক্ত সময়। এরপর গম যত দেরিতে বপন করা হবে ফলনও সে হারে কমে যাবে।  
    অধিক ফলনের জন্য গমের আধুনিক জাত যেমন- বারি গম-২৪, বারি গম-২৫, বারি গম-২৮, বারি গম-৩০, বারি গম-৩২, বারি গম-৩৩ অথবা ডাব্লিউএমআরআই গম-১, ডাব্লিউএমআরআই গম-২, ডাব্লিউএমআরআই গম-৩ আবাদ করুন।  
    বীজ বপনের আগে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক দ্বারা বীজ শোধন করে নিন।
    গজানোর ক্ষমতা শতকরা ৮০ ভাগ বা তার বেশি হলে বিঘাপ্রতি ১৬ কেজি বীজ বপন করুন।
    সেচসহ চাষের ক্ষেত্রে শেষ চাষের সময় প্রতি শতক জমিতে ৩০-৪০ কেজি জৈবসার, ৬০০-৭০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫৫০-৬০০ গ্রাম টিএসপি, ৪০০-৪৫০ গ্রাম এমওপি, ৪৫০-৫০০ গ্রাম জিপসাম প্রয়োগ করুন।
    খরচ ও সময় কমাতে বেড প্লান্টারের মাধ্যমে বীজ বপন করুন।
    তিন পাতা বয়সে প্রথম সেচের পর দুপুর বেলা মাটি ভেজা থাকা অবস্থায় প্রতি শতাংশে ৩০০-৪০০ গ্রাম ইউরিয়া উপরিপ্রয়োগ করুন। উল্লেখ্য যে, সেচ ছাড়া চাষের ক্ষেত্রে সমস্ত ইউরিয়া শেষ চাষের সময় অন্যান্য সারের সাথে প্রয়োগ করতে হবে।
    গমে তিনবার সেচ দিলে ফলন বেশি পাওয়া যায়। বীজ বপনের ১৭-২১ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ, ৫০-৫৫ দিনে দ্বিতীয় সেচ এবং ৭৫-৮০ দিনে ৩য় সেচ দিন।
ভুট্টা
    ভুট্টা গত মাসে আবাদ না করে থাকলে এ মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জমি তৈরি করে বীজ বপন করুন।
    ভুট্টার উন্নত জাতগুলো হলো বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৭, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৯, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১০, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১১, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১২, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩ এসব।
    এক শতাংশ জমিতে হাইব্রিড বীজ বপনের জন্য ৮০-৯০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়।
    সাধারণভাবে হাইব্রিড ভুট্টা চাষের জন্য প্রতি শতাংশ জমিতে ইউরিয়া ২-২.২৫ কেজি, টিএসপি ৯৫০-১০০০ গ্রাম, এমওপি ৭০০-৯০০ গ্রাম, জিপসাম ৯৫০-১০০০ গ্রাম, দস্তা ৪০-৬০ গ্রাম, বরিক এসিড ২০-৩০ গ্রাম এবং ১৬-২০ কেজি জৈবসার প্রয়োগ করুন।
সরিষা ও অন্যান্য তেল ফসল
    সরিষা গাছে ফুল আসার সময় শতাংশপ্রতি ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করুন। উপরি সার প্রয়োগের পর হালকা একটি সেচ দিন।
    মাটিতে রস কমে গেলে ২০-২৫ দিন পর আবারো একটি সেচ দিন।
আলু
    উপকূলীয় অঞ্চলে এ মাসেও আলু আবাদ শুরু করা যায়।
    অন্যান্য স্থানে রোপণকৃত জমিতে মাটির কেইল বেঁধে দিন এবং কেইলে মাটি তুলে দিন।
    সারের উপরিপ্রয়োগসহ প্রয়োজনীয় সেচ দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করুন।
শাকসবজি
    ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, শালগম, মুলা এসব বড় হওয়ার সাথে সাথে চারার গোড়ায় মাটি তুলে দিতে হবে। চারার বয়স ২-৩ সপ্তাহ হলে সারের উপরিপ্রয়োগ করুন।
    সবজি ক্ষেতের আগাছা, রোগ ও পোকা-মাকড় নিয়ন্ত্রণ করুন। এক্ষেত্রে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করতে পারেন। এতে পোকা দমনের সাথে সাথে পরিবেশও ভালো থাকবে।
    জমিতে প্রয়োজনে সেচ প্রদান করুন।
    টমেটো গাছের অতিরিক্ত ডাল ভেঙে দিয়ে খুটির সাথে বেঁধে দিন।
    ঘেরের বেড়িবাঁধে টমেটো, মিষ্টিকুমড়া, শিম চাষ করুন।
বিবিধ
    অধিক লাভবান হতে উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন ।
    স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
    শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।

লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল :manzur_1980@yahoo.com

 

মাঘ মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

মাঘ মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
বোরো ধান
    ধানের চারা রোপণের ১৫-২০ দিন পর প্রথম কিস্তি, ৩০-৪০ দিন পর দ্বিতীয় কিস্তির ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করুন।
    বোরো ধানে অল্টারনেট ওয়েটিং ও ড্রায়িং (অডউ) পদ্ধতিতে সেচ দিন।
    রোগ ও পোকা থেকে ধান গাছকে বাঁচাতে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রয়োগ করুন।
    ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করুন।
    আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করুন।
    রোগ ও পোকা দমনে অনুমোদিত বালাইনাশক ব্যবহার করুন।
গম
    গমের জমিতে যেখানে ঘনচারা রয়েছে তা পাতলা করে দিন।
    গম গাছ থেকে যদি শিষ বেড় হলে বা গম গাছের বয়স ৫৫-৬০ দিন হলে জরুরিভাবে গমক্ষেতে সেচ দিন।
    ভালো ফলনের জন্য দানা গঠনের সময় আরেকবার সেচ দিন।
    গমক্ষেতে ইঁদুর দমনের কাজটি সকলে মিলে একসাথে করুন।
ভুট্টা
    ভুট্টাক্ষেতে গাছের গোড়ার মাটি তুলে দিন।
    গোড়ার মাটির সাথে ইউরিয়া সার ভালো করে মিশিয়ে দিয়ে জমিতে একটি সেচ দিন।
    গাছের নিচের দিকের মরা পাতা ভেঙ্গে দিন।
আলু
    আলু ফসলে নাবি ধসা রোগ দেখা দিতে পারে। সে কারণে ¯েপ্রয়িং শিডিউল মেনে চলুন।
    মড়ক রোগ দমনে দেরি না করে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক (২ গ্রাম এক্সট্রামিল অথবা ডায়থেন এম ৪৫ অথবা সিকিউর অথবা মেলুডি ডুও প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে) নিয়মিত ¯েপ্র করুন।
    মড়ক লাগা জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ রাখুন।
    আলু গাছের বয়স ৯০ দিন হলে মাটির সমান করে গাছ কেটে দিন এবং ১০ দিন পর পটেটো ডিগার দিয়ে আলু তুলে ফেলুন।
    আলু তোলার পর ভালো করে শুকিয়ে বাছাই করুন এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিন।
তুলা
    তুলা সংগ্রহের কাজ এ মাস থেকেই শুরু করতে হবে।
    শুরুতে ৫০% বোল ফাটলে প্রথম বার, বাকি ফলের ৩০% পরিপক্ব হলে দ্বিতীয় বার এবং অবশিষ্ট ফসল পরিপক্ব হলে শেষ অংশের তুলা সংগ্রহ করুন।
    রৌদ্রময় শুকনা দিনে বীজ তুলা সংগ্রহ করুন।
    ভালো তুলা আলাদাভাবে তুলে ৩-৪ বার রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন।
শাকসবজি
    সমন্বিত বালাই দমন পদ্ধতিতে শাকসবজির রোগ ও পোকা দমন করুন।
    শীতকালে মাটিতে রস কমে যায় বলে সবজি ক্ষেতে চাহিদামাফিক সেচ দিন।
ডাল ও তেল ফসল
    সরিষা, তিসি বেশি পাকলে রোদের তাপে ফেটে গিয়ে বীজ পড়ে যেতে পারে, তাই এগুলো ৮০ ভাগ পাকলেই সংগ্রহের ব্যবস্থা নিন।
    ডাল ফসলের ক্ষেত্রে গাছ গোড়াসহ না উঠিয়ে মাটি থেকে কয়েক ইঞ্চি রেখে ফসল সংগ্রহ করুন। এতে জমির উর্বরতা এবং নাইট্রোজেন সরবরাহ বাড়বে।
গাছপালা
    শীতে গাছের গোড়ায় নিয়মিত সেচ দিন।
    গোড়ার মাটি আলগা করে দিন এবং আগাছামুক্ত রাখুন।
    আম গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক (টিল্ট-২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি অথবা ১ মিলি কন্জা প্লাস অথবা ২ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে) ¯েপ্র করুন। আমের আকার মটর দানার মতো হলে গাছে ২য় বার ¯েপ্র করুন।
    আম গাছের হপার পোকা দমনের জন্য মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বেই অনুমোদিত কীটনাশক (প্রতি লিটার পানির সাথে ১.০ মিলি সিমবুস/ফেনম/ডেসিস ২.৫ ইসি মিশিয়ে) গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপাল ভালোভাবে ভিজিয়ে ¯েপ্র করুন।
    ফলগাছে স্প্রে করার জন্য ফুটপাম্প ব্যবহার করুন।
বিবিধ
    অধিক লাভবান হতে উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন ।
    স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
    শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।

লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল : manzur_1980@yahoo.com

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
আউশ ধান 
 বন্যার আশঙ্কা হলে আগাম রোপণ করা আউশ ধান শতকরা ৮০ ভাগ পাকলেই কেটে মাড়াই-ঝাড়াই করে শুকিয়ে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করুন।
আমন ধান
 আমন ধানের বীজতলা তৈরির সময় এখন। পানিতে ডুবে না এমন উঁচু খোলা জমিতে বীজতলা তৈরি করতে হবে। বন্যার কারণে রোপা আমনের বীজতলা করার মতো জায়গা না থাকলে ভাসমান বীজতলা বা দাপগ পদ্ধতিতে বীজতলা করে চারা উৎপাদন করুন।
 লবণাক্ত এলাকার জন্য ব্রি ধান৫৩, ব্রি ধান৫৪, ব্রি ধান৭৩, বিনা ধান-২৩; অলবণাক্ত জোয়ারভাটা এলাকার জন্য ব্রি ধান৭৬, ব্রি ধান৭৭, ব্রি ধান৭৮; জলমগ্ন এলাকার জন্য ব্রি ধান৫১, ব্রি ধান৫২, ব্রি ধান৭৯, বিনা ধান-১১, বিনা ধান-১২; খরাপ্রবণ এলাকার জন্য ব্রি ধান৫৬, ব্রি ধান৭১, বিনা ধান-১৭; স্বল্পমেয়াদি হিসেবে ব্রি ধান৫৭, ব্রি ধান৭৫; জিংকসমৃদ্ধ ধানের জন্য ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৭২, বিনা ধান-২০ এছাড়া অধিক ফলনের জন্য ব্রি হাইব্রিড ধান৪, ব্রি হাইব্রিড ধান৬ আবাদ করুন।
ভালো চারা পেতে প্রতি বর্গমিটার বীজতলার জন্য ২ কেজি গোবর, ১০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ১০ গ্রাম জিপসাম সার প্রয়োগ করুন;
 আষাঢ় মাসে রোপা আমন ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যে মূল জমিতে শেষ চাষের সময় হেক্টরপ্রতি ৯০ কেজি টিএসপি, ৭০ কেজি এমওপি, ১১ কেজি দস্তা এবং ৬০ কেজি জিপসাম দিন।
 জমির এক কোণে মিনি পুকুর খনন করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করুন।
পাট
 পাট গাছের বয়স চার মাস হলে ক্ষেতের পাট গাছ কাটুন। 
 পাতা ঝরে গেলে ৩/৪ দিন পাট গাছগুলোর গোড়া একফুট পানিতে ডুবিয়ে রাখার পর পরিষ্কার পানিতে জাগ দিন। ি পাট পচে গেলে পানিতে আঁটি ভাসিয়ে আঁশ ছাড়ানোর ব্যবস্থা নিন। এতে পাটের আঁশের গুণাগুণ ভালো থাকবে। ছাড়ানো আঁশ পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে বাঁশের আড়ে শুকাতে হবে
 যে সমস্ত জায়গায় জাগ দেয়ার পানির অভাব সেখানে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচাতে পারেন। এতে আঁশের মান ভালো হয় এবং পচন সময় কমে যায়।
 পাটের বীজ উৎপাদনের জন্য ১০০ দিন বয়সের পাট গাছের এক থেকে দেড় ফুট ডগা কেটে নিয়ে দু’টি গিটসহ ৩/৪ টুকরা করে ভেজা জমিতে দক্ষিণমুখী কাঁত করে রোপণ করুন। 
ভুট্টা
 পরিপক্ব হওয়ার পর বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার আগে মোচা সংগ্রহ করে ঘরের বারান্দায় রাখুন। রোদ হলে শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন। 
 মোচা পাকতে দেরি হলে মোচার আগা চাপ দিয়ে নিম্নমুখী করে দিন, এতে বৃষ্টিতে মোচা নষ্ট হবে না।
শাকসবজি
 এ সময়ে উৎপাদিত শাকসবজির মধ্যে আছে ডাঁটা, গিমাকলমি, পুঁইশাক, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, ঝিঙা, শসা, ঢেঁড়স, বেগুন। এসব সবজির গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করুন এবং প্রয়োজনে মাটি তুলে দিন। এ ছাড়া বন্যার পানি সহনশীল লতিরাজ কচুর আবাদ করুন।
 সবজি ক্ষেতে পানি জমতে দেয়া যাবে না। পানি জমে গেলে দ্রুত সরানোর ব্যবস্থা নিন।
 আগাম জাতের শিম এবং লাউয়ের জন্য প্রায় ৩ ফুট দূরে দূরে ১ ফুট চওড়া ও ১ ফুট গভীর করে মাদা তৈরি করুন। মাদা তৈরির সময় গর্তপ্রতি ১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম সরিষার খৈল, ২ কেজি ছাই, ১০০ গ্রাম টিএসপি ভালোভাবে মাদার মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে প্রতি গাদায় ৩/৪টি ভালো সবল বীজ রোপণ করুন। 
গাছপালা
 এ সময়টা গাছের চারা রোপণের জন্য খুবই উপযুক্ত। বসতবাড়ির আশেপাশে, খোলা জায়গায়, চাষাবাদের অনুপযোগী পতিত জমিতে, রাস্তাঘাটের পাশে, পুকুর পাড়ে, নদীর তীরে গাছের চারা বা কলম রোপণের উদ্যোগ নিন। 
 চারা রোপণের লক্ষ্যে এক ফুট চওড়া ও এক ফুট গভীর গর্ত করে গর্তের মাটির সাথে ১০০ গ্রাম করে টিএসপি ও এমওপি সার মিশিয়ে, দিন দশের পরে চারা বা কলম রোপণ করুণ। চারা রোপণের পর শক্ত খুঁটি দিয়ে চারা বেঁধে দিন। এরপর বেড়া বা খাঁচা দিয়ে চারা রক্ষা করা, গোড়ায় মাটি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার, সেচনিকাশ নিশ্চিত করুন।
বিবিধ
 উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন, অধিক লাভবান হন।
 স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
 শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।
 
লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল : সধহুঁৎথ১৯৮০@ুধযড়ড়.পড়স

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
ধান
 দেরিতে রোপণ করা বোরো ধানের জমিতে চারার বয়স ৫০-৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিস্তি উপরিপ্রয়োগ করুন। 
নাবি বোরো ধানের থোড় আসার সময় যাতে খরার জন্য পানির অভাব না হয় তাই আগে থেকেই সম্পূরক সেচের জন্য মাঠের এক কোনে মিনিপুকুর তৈরি করুন। থোড় আসা শুরু হলে জমিতে পানির পরিমাণ দ্বিগুন বাড়ান এবং ধানের দানা শক্ত হলে জমি থেকে পানি বের করে দিন। 
এ মাসে শিলাবৃষ্টি হতে পারে, বোরো ধানের ৮০% পাকলে তাড়াতাড়ি কেটে ফেলুন। ধান সংগ্রহের জন্য কম্বাইন হারভেস্টার/মিনি কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করুন। মিনি কম্বাইন হারভেস্টারে প্রতি বিঘায় খরচ হয় মাত্র ২০০-৩০০ টাকা।
 বন্যাপ্রবণ নিচু এলাকায় আগাম জাতের আউশ ধান (ব্রি ধান৪২, ব্রি ধান৪৩, ব্রি ধান৫৪, ব্রি ধান৬৫, ব্রি ধান৮২, ব্রি ধান৮৩, ব্রি ধান৮৫ এসব) চাষ করুন।
ভুট্টা (খরিপ) 
 খরিপ ভুট্টার বয়স ২০-২৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ করুন। 
 মাটিতে রসের ঘাটতি থাকলে হালকা সেচ দিন এবং আগাছা পরিষ্কার করে গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দিন।
পাট
 বৈশাখ মাস তোষা পাটের বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। বিজেআরআই তোষা-৭, ও-৩৮২০, ও-৭৯৫ ভালো জাত। 
 ভালো ফলনের জন্য শতাংশপ্রতি ৮০০ গ্রাম ইউরিয়া, ২০০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি সার শেষ চাষের সময় মাটিতে ভালভাবে মিশিয়ে দিন। 
 জমিতে সালফার ও জিংকের অভাব থাকলে জমিতে সার দেয়ার সময় শতাংশপ্রতি ৪০০ গ্রাম জিপসাম ও ৫০ কেজি দস্তা সার দিন। 
শাক-সবজি 
 লতানো সবজির জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাচা দিন। লতানো সবজির দৈহিক বৃদ্ধি যত বেশি হবে তার ফুল ফল ধারণ ক্ষমতা তত কমে যায়। সেজন্য গাছের বাড়বাড়তি বেশি হলে লতার/গাছের ১৫-২০ শতাংশের পাতা লতা কেটে দিতে হবে। এতে গাছে তাড়াতাড়ি ফুল ও ফল ধরবে। অধিক ফলনের জন্য কুমড়া জাতীয় সব সবজিতে হাত পরাগায়ন বা কৃত্রিম পরাগায়ন করুন। গাছে ফুল ধরা শুরু হলে প্রতিদিন সদ্য ফোটা পুরুষফুল সংগ্রহ করে পাপড়িগুলো ফেলে দিয়ে পরাগমুন্ডটি স্ত্রী ফুলের গর্ভমুন্ডে ঘষে হাতপরাগায়ন নিশ্চিত করুন। 
 এ মাসে কুমড়া জাতীয় ফসলে মাছি পোকা দারুনভাবে ক্ষতি করে থাকে। এক্ষেত্রে জমিতে খুঁটি বসিয়ে খুঁটির মাথায় বিষটোপ ফাঁদ দিলে বেশ উপকার হয়। এছাড়া সেক্স ফেরোমন ব্যবহার করেও এ পোকার আক্রমণ রোধ করা যায়। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করতে চাইলে বারি টমেটো ৪, বারি টমেটো ৫, বারি টমেটো ৬, বারি টমেটো ১০, বারি টমেটো ১১, বারি হাইব্রিড টমেটো ৪, বারি হাইব্রিড টমেটো ৫, বা বিনা টমেটো ১, বিনা টমেটো ২-এর চাষ করতে পারেন। 
 গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করতে হলে পলিথিনের ছাওনির ব্যবস্থা করুন। সেসাথে এ ফসলটি সফলভাবে চাষের জন্য টমেটোটোন নামক হরমোন প্রয়োগ করুন। স্প্রেয়ারের সাহায্যে প্রতি লিটার পানিতে ২০ মিলি টমেটোটোন মিশিয়ে ফুল আসার পর ফুলের গায়ে ৫-৭ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। 
ফলগাছ 
এ সময় কাঁঠালের নরম পঁচা রোগ দেখা দেয়। এলাকায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব থাকলে ফলে রোগ দেখা দেয়ার আগেই ফলিকুল ০.০৫% হারে বা ইন্ডোফিল এম-৪৫ বা রিডোমিল এম জেড-৭৫ প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৩ বার স্প্রে করুন। 
 নারকেলের চারা এখন লাগাতে পারেন। ভালো জাতের সুস্থ সবল চারা ৬-৮ মিটার দূরে লাগানো যায়। চারা রোপণের সময় চারাটিকে এমনভাবে গর্তে বসিয়ে মাটি চাপা দিতে হবে যাতে নারিকেলের পিঠের কেবল ইঞ্চি খানেক মাটির উপরে ভেসে থাকে এবং বাকিটা মাটির নিচে থাকে।
 
লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল  : সধহুঁৎথ১৯৮০@ুধযড়ড়.পড়স

পৌষ মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

পৌষ মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
বোরো ধান
   বোরো মৌসুমে ব্রি ধান২৮ ও ব্রি ধান২৯ এর পরিবর্তে ব্রি ধান৮৮, ব্রি ধান৮৯, ব্রি ধান৯২, ব্রি ধান৯৬, ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৯, বঙ্গবন্ধু ধান ১০০, ব্রি ধান১০১, ব্রি ধান১০২, বিনা ধান ১০, বিনা ধান ১৪, বিনা ধান ২৪ ও অনুমোদিত হাইব্রিড ধান আবাদ করুন।
    রাাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চাষের জন্য ট্রেতে চারা তৈরি করুন।
    অতিরিক্ত ঠা-ার সময় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে রাখুন এবং বীজতলার পানি সকালে বের করে দিয়ে আবার নতুন পানি দিন।
    প্রতিদিন সকালে চারার উপর জমাকৃত শিশির ঝরিয়ে দিন।
    চারাগাছ হলদে হয়ে গেলে প্রতি বর্গমিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করুন। এরপরও যদি চারা সবুজ না হয় তবে প্রতি বর্গমিটারে ১০ গ্রাম করে জিপসাম দিন।
    সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করে জমি তৈরি করুন, লাভবান হোন।
    চারা রোপণে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার করুন। সময় ও খরচ উভয়ই বাঁচান।
    চারার বয়স ২৫-৩০ দিন হলে মূল জমিতে চারা রোপণ করুন।
গম
    চারার বয়স ১৭-২১ দিন হলে প্রথম সেচ দিন।
    একরপ্রতি ১২-১৪ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে এবং
    বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে উইডার দিয়ে গমক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করুন।
ভুট্টা
    ভুট্টাক্ষেতের গাছের গোড়ার মাটি তুলে দিন।
    গোড়ার মাটির সাথে ইউরিয়া সার ভালো করে মিশিয়ে দিয়ে সেচ দিন।
    গাছের নিচের দিকের মরা পাতা ভেঙে দিন।
আলু
    চারা রোপণের ৩০-৩৫ দিন পর মাটি তোলার সময় ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করুন।
    নাবি ধসা রোগ থেকে আলু রক্ষার্থে নিম্ন তাপমাত্রা, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া ও বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে ডায়থেন এম ৪৫ অথবা হেম্যানকোজেব অথবা ইন্ডোফিল প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ¯েপ্র করুন।
    গাছে রোগ দেখা দেয়া মাত্রই ৭ দিন পরপর সিকিউর অথবা অ্যাক্রোভেট এম জেড ২ গ্রাম/লিটার হারে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
    মড়ক লাগা জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ রাখুন ।
তুলা
    তুলা পরিপক্ব হলে রৌদ্রময় শুকনা দিনে বীজ তুলা সংগ্রহ করুন।
    ভালো তুলা আলাদাভাবে তুলে ৩-৪ বার রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন।
ডাল ও তেল ফসল
    সরিষা, তিসি এগুলো ৮০ ভাগ পাকলেই সংগ্রহের ব্যবস্থা নিন।
    ডাল ফসলের ক্ষেত্রে গাছ গোড়াসহ না উঠিয়ে মাটি থেকে কয়েক ইঞ্চি রেখে ফসল সংগ্রহ করুন।
শাকসবজি
    লালশাক, মুলাশাক, পালংশাক একবার শেষ হয়ে গেলে আবার বীজ বুনে দিন।
    শীতকালে মাটিতে রস কমে যায় বলে সবজি ক্ষেতে চাহিদামাফিক নিয়মিত সেচ দিন।
বিবিধ
    অধিক লাভবান হতে উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন ।
    স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
    শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।

লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল : manzur_1980@yahoo.com

ভাদ্র মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

ভাদ্র মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
আমন ধান
    আমন ধানের ক্ষেতে আগাছা জন্মালে তা পরিষ্কার করে ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করুন।
    আমন ধানের জন্য প্রতি একর জমিতে ৮০ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োজন হয়। এ সার তিন ভাগ করে প্রথম ভাগ চারা লাগানোর ১৫-২০ দিন পর, দ্বিতীয় ভাগ ৩০-৪০ দিন পর এবং   তৃতীয় ভাগ ৫০-৬০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে।
নিচু জমি থেকে পানি নেমে গেলে এসব জমিতে এখনো আমন ধান রোপণ করা যাবে। দেরিতে রোপণের জন্য বিআর ২২, বিআর ২৩, ব্রি ধান৪৬, বিনাশাইল, নাইজারশাইল বা স্থানীয় উন্নত ধান বেশ উপযোগী।
দেরিতে চারা রোপণের ক্ষেত্রে প্রতি গুছিতে ৫-৭টি চারা দিয়ে ঘন করে রোপণ করুন।
    নিয়মিত জমি পরিদর্শন করে, জমিতে খুটি দিয়ে, আলোর ফাঁদ পেতে, হাতজাল দিয়ে পোকা নিয়ন্ত্রণ করুন।
পাট
    বীজ উৎপাদনের জন্য ভাদ্রের শেষ পর্যন্ত দেশী পাট এবং আশ্বিনের মাঝামাঝি পর্যন্ত তোষা পাটের বীজ বোনা যায়।
    বন্যার পানি উঠেনা এমন সুনিষ্কাশিত উঁচু জমিতে জো বুঝে প্রতি শতাংশে লাইনে বুনলে ১০ গ্রাম আর ছিটিয়ে বুনলে ১৬ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। জমি তৈরির সময় শেষ চাষে শতকপ্রতি ২৭০ গ্রাম ইউরিয়া, ৪০০ গ্রাম টিএসপি, ১৬০ গ্রাম এমওপি সার দিন। পরবর্তীতে শতাংশপ্রতি ইউরিয়া ২৭০ গ্রাম করে দুই কিস্তিতে বীজ বপনের ২০-২৫ দিন এবং ৪০-৪৫ দিন পর জমিতে উপরিপ্রয়োগ করুন।
আখ
    এসময় আখ ফসলে লালপচা রোগ দেখা দিতে পারে। লালপচা রোগের আক্রমন হলে আখের কা- পচে যায় এবং হলদে হয়ে শুকিয়ে যেতে থাকে। এজন্য আক্রান্ত আখ তুলে পুড়িয়ে ফেলুন এবং জমিতে যাতে পানি না জমে সে দিকে খেয়াল রাখুন।
তুলা
    ভাদ্র মাসের প্রথম দিকেই তুলার বীজ বপন কাজ শেষ করুন।
    বৃষ্টির ফাঁকে জমির জো অবস্থা বুঝে ৩-৪টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করে বিঘাপ্রতি প্রায় ২ কেজি তুলা বীজ বপন করুন। লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৬০-৯০ সেন্টিমিটার এবং বীজ থেকে বীজের দূরত্ব ৩০-৪৫ সেন্টিমিটার বজায় রাখুন।
    তুলার বীজ বপনের সময় খুব সীমিত। হাতে সময় না থাকলে জমি চাষ না দিয়ে নিড়ানি বা আগাছা নাশক প্রয়োগ করে ডিবলিং পদ্ধতিতে বীজ বপন করুন। বীজ গজানোর পর কোদাল দিয়ে সারির মাঝখানের মাটি আলগা করে দিন।
    সমতল এলাকার জন্য তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাত যেমন সিবি১৬, সিবি১৭, সিবি১৮, সিডিবি তুলা এম-১, সিবি হাইব্রিড-১ আবাদ করুন। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড়ি তুলা-১ এবং পাহাড়ি  তুলা-২ নামে উচ্চফলনশীল জাতের তুলা চাষ করুন।
শাকসবজি
    ভাদ্র মাসে লাউ ও শিমের বীজ বপন করা যায়। এজন্য  ৪-৫ মিটার দূরে দূরে ৭৫ সেমি. চওড়া এবং ৬০ সেমি. গভীর করে মাদা বা গর্ত তৈরি করুন।
    প্রতি মাদায় ২০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম টিএসপি এবং ৭৫ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করুন।
    মাদা তৈরি হলে প্রতি মাদায় ৪-৫টি বীজ বুনে দিতে হবে এবং চারা গজানোর ২-৩ সপ্তাহ পর দুই-তিন কিস্তিতে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৭৫ গ্রাম এমওপি সার উপরিপ্রয়োগ করুন।
    এসময় আগাম শীতকালীন সবজি চারা উৎপাদনের কাজ শুরু করা যেতে পারে। সবজি চারা উৎপাদনের জন্য উঁচু এবং আলো বাতাস লাগে এমন জায়গা নির্বাচন করুন।
এক মিটার চওড়া এবং জমির দৈর্ঘ্য অনুসারে লম্বা করে বীজতলা করে সেখানে উন্নত জাতের ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটো এসবের বীজ বুনন।
গাছপালা
    ভাদ্র মাসেও ফলদবৃক্ষ এবং ঔষধি গাছের চারা রোপণ করুন।
    বন্যায় বা বৃষ্টিতে মৌসুমের রোপিত চারা নষ্ট হয়ে থাকলে সেখানে নতুন চারা লাগিয়ে শূন্যস্থানগুলো পূরণ করুন।
    এবছর রোপণ করা চারার গোড়ায় মাটি দিন, চারার অতিরিক্ত এবং রোগাক্রান্ত ডাল ছেঁটে দিন।
    ভাদ্র মাসে আম, কাঁঠাল, লিচু গাছ ছেঁটে দিন। ফলের বোঁটা, গাছের ছোট ডালপালা, রোগাক্রান্ত অংশ ছেটে দিলে পরের বছর বেশি করে ফল ধরে এবং ফলগাছে রোগও কম হয়।
বিবিধ
    উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন, অধিক লাভবান হন।
    স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
    শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।

লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল : manzur_1980@yahoo.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon